ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮



ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮-খুটিনাটি পর্ব ১

ফৌজদারী কার্যবিধি একটি পদ্ধতিগত আইন যা পাস করা হয় ১৮৬১ সালে এবং পরবর্তীতে এই আইনটি কার্যকর করা হয় প্রথম জুলাই ১৮৯৮ সালে। ফৌজদারী কার্যবিধিতে মোট ধারা আছে ৫৬৫ টি এবং তফসিল মোট পাঁচটির মধ্যে একটি বাতিল করা হয়েছে এবং বর্তমানে চারটি বলবৎ আছে।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮- ধারা ৫

ফৌজদারী কার্যবিধি ৫ ধারায় বলা হয়েছে দন্ডবিধিতে উল্লেখিত অপরাধের বিচার পরিচালনা করার ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য আইনে অপরাধের বিচার করার ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে।

অন্যদিকে, ফৌজদারী কার্যবিধি ৫(২) ধারায় বলা হয়েছে যে, অন্যান্য আইনে উল্লেখিত অপরাধের বিচার যদিও ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে পরিচালনা হবে কিন্তু যদি অন্য আইনে অপরাধটির তদন্ত, ইনকোয়ারি, বিচার অথবা অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বা কোন নির্দেশনা দেয়া থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে উক্ত আইনটি প্রযোজ্য হবে।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮- ধারা ৬ 

ফৌজদারী কার্যবিধে ৬ ধারা অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট ও বিধি বহির্ভূত অন্যান্য আদালত ব্যতীত ফৌজদারী আদালত সাধারণত ২ শ্রেণীর, ম্যাজিস্ট্রেট ২ শ্রেণীর এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৪ শ্রেণীর।

ফৌজদারী কার্যবিধি ৬(১) ধারা অনুসারে ফৌজদারি আদালত সাধারণত ২ শ্রেণীর হয় যেমন-

১) দায়রা আদালত ( Courts of Sessions)

২) ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ( Magistrate Courts)

ফৌজদারী কার্যবিধি ৬ (২) ধারা অনুসারে ২ শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে থাকে যেমন-

১)বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট (Judicial Magistrates)

২)নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (Executive Magistrates)

ফৌজদারী কার্যবিধি ৬(৩) ধারা অনুসারে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট সাধারণত ৪ শ্রেণীর হয়ে থাকে যেমন-

১) চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (Chief Metropolitan Magistrate) এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (Chief Judicial Magistrate)

ব্যাখ্যা: মহানগর এলাকার ভেতরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হয় অন্যদিকে মহানগর এলাকার বাহির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়।

২) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (Metropolitan Magistrate) এবং ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট (Magistrate of the first class)

ব্যাখ্যা: মহানগর এলাকার ভেতর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হয় অন্যদিকে মহানগর এলাকার বাহিরে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হয়।

৩) ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট( Magistrate of the second class)

৪) ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট( Magistrate of the third class)



ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারা ৯

ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারার ৯(১) অনুসারে সরকার প্রত্যেকটি দায়রা বিভাগের জন্য একটি করে দায়রা আদালত প্রতিষ্ঠান করবেন এবং উক্ত দ্বারা আদালতের জন্য একটি করে বিচারক নিয়োগ করবেন।

মহানগর ভেতরে যে দায়রা আদালতটি প্রতিষ্ঠিত হবে সে দায়রা আদালতের নাম হবে মহানগর দায়রা আদালত

ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারার ৯(৩) অনুসারে সরকার এক বা একাধিক আদালত এখতিয়ার প্রয়োগের জন্য অতিরিক্ত তারা গুজক মোজাহাজ নিয়োগ করবেন।

ফৌজদারী কার্যবিধি নয় তিনের ক ধারায় বলা আছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এর সদস্যদের মধ্য থেকে দায়রা জজ অতিরিক্ত তারা জজ এবং যুগ্ন দায়রা জজ রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে নিয়োগ দিবেন।

রাষ্ট্রপতি বিচারবিভাগীয় পদে অথবা বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে সংবিধানের 1 অনুচ্ছেদ এর ক্ষমতা বলে নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

 ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সমূহ

ফৌজদারি কার্যবিধে ১৯৯৮ ধারা ৬(৩) অনুসারে বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট চার শ্রেণীর তার মধ্যে মহানগর এলাকার বাহিরে 

  • চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট 
  • প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট 
  • দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট 
  • তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট

মহানগর এলাকার ভেতরে 

  • চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট 
  • মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট 

অর্থাৎ একটি জেলা পর্যায়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চার শ্রেণীর এবং মহানগর এলাকার ভেতরে দুই শ্রেণীর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করে থাকে


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারা ১০

ধারা ১০(১) অনুসারে সরকার প্রত্যেক জেলা এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় যত সংখ্যক তত ব্যক্তিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন তবে তাদের মধ্য থেকে একজনকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করবেন

ধারা ১০(৫) অনুসারে সরকার  যে কোনো ব্যক্তিকে  বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন ) থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে  নিয়োগ প্রদান করবেন

ধারা ১০(৬) অনুসারে যেকোনো জেলা বা উপজেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার, অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার অথবা থানা নির্বাহী অফিসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গণ্য হবে এবং তারা তাদের নির্দিষ্ট এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে

ধারা ১০(৭) অনুসারে সরকার কোন মেট্রোপলিটন এলাকায় যেকোনো পুলিশ কমিশনার কে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রদান করতে পারে


ফৌজদারী কার্যবিধি- ধারা ১১ (বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট)

ফৌজদারী কার্যবিধি ১১ ধারায়  মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট গণের নিয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে 

ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮- ধারা ১২(বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট)

ধারা ১২(১) অনুসারে সরকার মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে যেকোনো ব্যক্তির উপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যেকোন ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন।

ধারা ১২(২) অনুসারে সরকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ যে ক্ষমতা যা কোন ব্যক্তির উপর অর্পণ করা হয় উক্ত বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন ম্যাজিস্ট্রেটকেই বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয় ।

১২(৩) ধারা অনুসারে সরকার মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে হাইকোর্ট বিভাগের সাথে পরামর্শ করে যে কোন ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর অর্পণযোগ্য ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন এবং ধারা ১২ (৫) অনুসারে সেই নিয়োগকৃত ম্যাজিস্ট্রেটকেই বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট বলা হয়।

ধারা ১২(৫) অনুসারে সরকার যে কোন মেট্রোপলিটন এলাকায় হাইকোর্ট বিভাগের সাথে পরামর্শ করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর অর্পণযোগ্য যে কোন ক্ষমতা যে কোন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর ওপর প্রদান করতে পারে এবং ধারা ১২ (৬) অনুসারে উক্ত নিয়োগকৃত ম্যাজিস্ট্রেটকেই বিশেষ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বলে গণ্য করা হয় ।

ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮-ধারা ১৮(মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণের নিয়োগ)


ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮ ধারায় বলা হয়েছে প্রত্যেক মেট্রোপলিটন এলাকায় অথবা মহানগর এলাকায় নিযুক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এর সদস্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ প্রাপ্ত হবে।

অর্থাৎ ফৌজদারী কার্যবিধির ১১ এবং ১৮ ধারায় নিয়োগ প্রাপ্ত প্রত্যেক বিভাগীয় বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি উক্ত বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট গণের নিয়োগ প্রদান করে থাকেন উক্ত নিয়োগ প্রদানের ক্ষমতা সংবিধানের ১১৫ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফৌজদারী কার্যবিধি ধারা ২২-২৫ ( জাস্টিসেস অফ দি দি পিস)

২২ ধারা- অনুসারে সরকার বাংলাদেশের নাগরিক ও অন্য কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিক না এরূপ যেকোনো ব্যক্তিকে গেজেটের মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কোন স্থানীয় এলাকার জন্য জাস্টিস অফ দা পিস নিযুক্ত করতে পারে।

২৫ ধারা- অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেক বিচারক পদাধিকার বলে সমগ্র বাংলাদেশের জাস্টিস অফ দিপিস বলা হয় আবার অন্যদিকে দায়রা বিচারকগণ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট গণ পদাধিকার বলে তাদের অভিক্ষেত্রভুক্ত এলাকার জন্য জাস্টিস হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন।

ফৌজদারি আদালত গুলোর ক্ষমতা

ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ ধারা ২৮

ধারা-২৮ অনুসারে দন্ডবিধিতে উল্লেখিত অপরাধসমূহের বিচার করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় তফসিলের অষ্টম কলামে যে সকল আদালতকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এমন সকল আদালত উক্ত সকল অপরাধ সমূহের বিচার করতে পারবেন এছাড়াও দন্ডবিধির অধীন যেকোনো অপরাধের বিচার করতে পারে হাইকোর্ট বিভাগ এবং দায়রা আদালত।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ ধারা ২৯ 

ধারা-২৯ অনুসারে দন্ডবিধি ব্যতীত অন্যান্য আইনে উল্লেখিত অপারাসমূহের বিচার করার ক্ষেত্রে উক্ত আইনে কোন আদালতের কথা উল্লেখ কোন আদালতের কথা উল্লেখ থাকলে উক্ত আদালত কর্তৃক বিচার করা হবে । 

যেমন- দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ অধীনে অপরাধসমূহের বিচার কিভাবে পরিচালনা করা হবে তা উক্ত আইনে উল্লেখ করা আছে বিধায় এই আইনটির অধীনে বিচার করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ উল্লেখিত নিয়ম পালন করা হবে।

তবে উল্লেখ্য থাকে যে উক্ত অন্যান্য আইনে যদি বিচার করা বিধান উল্লেখ করা না থাকে সেক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনে উল্লেখিত আদালতে বিচার করা হবে।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ ধারা ২৯খ (Jurisdiction of juveniles offence)

ধারা ২৯ খাওয়া অনুসারে কোন ব্যক্তি যদি ১৫ বছরের কম হয় উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক কোনো অপরাধের বিচার করা হবে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য যেকোনো ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে ।  

যদিও শিশু আইন ২০১৩ অনুসারে ১৮ বছর পর্যন্ত যেকোনো ব্যক্তিকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হলেও উক্ত আইন অনুসারে পনের বছরের কম বয়স্ক ব্যক্তিকে শিশু হিসেবে বোঝানো হয়েছে।

ফৌজদারী আদালত গুলোর দন্ড প্রদানের ক্ষমতা


ফৌজদারী কার্যবিধি ধারা ২৯ গ (বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচার করার ক্ষমতা)


ধারা ২৯ (গ) অনুসারে সরকার হাইকোর্ট বিভাগের সাথে পরামর্শ করে বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট তথা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেরকে মৃত্যুদণ্ড ব্যতীত অর্থাৎ সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারে।

অন্যদিকে ধারা ২৯ (গ) অনুসারে বিশেষভাবে বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট তথা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা যে কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা দশ বছরের অধিক কারাবাস সেই সকল অপরাধ ব্যতীত অন্য যেকোন অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারা ৩১ হাইকোর্ট বিভাগ এবং দায়রা আদালতের দন্ড প্রদানের ক্ষমতা


ধারা ৩১- অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগ আইনে অনুমোদিত যে কোন দন্ড দিতে পারে।

ধারা ৩১- অনুসারে দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত দায়রা জজ আইনে অনুমোদিত যেকোনো দণ্ড দিতে পারে।

তবে শর্ত থাকে যে মৃত্যুদণ্ড ও কার্যকর করার জন্য দায়রা জজ এবং অতিরিক্ত দায়রা জজকে হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হয়।

ধারা ৩১- অনুসারে যুগ্ন দায়রা জজ সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদন্ড দিতে পারে অর্থাৎ যুগ্ম দায়রা জজ নিজের ক্ষমতা বলে মৃত্যুদন্ড অথবা ১০ বছরের অধিক কারাদণ্ড প্রদান করতে পারেন না।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ ধারা ৩২ (বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট দের দন্ড প্রদানের ক্ষমতা)


ধারা ৩২- অনুসারে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত নিঃসঙ্গ বা নির্জন অপেরা অবরোধ সহ সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিতে পারে এবং অর্থদণ্ড হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার জরিমানা বা অর্থদণ্ড।


ধারা ৩২- অনুসারে দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত নিঃসঙ্গ বা নির্জন নির্জন অবরোধ সহ সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে।


ধারা ৩২- অনুসারে তৃতীয় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড দিতে পারে এবং অর্থদণ্ড হিসেবে ২০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে।


ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৯৮ ধারা ৩৩ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা হিসেবে জরিমানা অনাদায় সাজা প্রদানের বিধান

৩৩ ধারা- অনুসারে জরিমানা অনাদায় সাজা প্রদানের ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে প্রদান করা হয়েছে এবং জরিমানা অনাদের ক্ষেত্রে আইনে অনুমোদিত যে কোন মেয়াদের কারাবাস ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রদান করতে পারে ।

তবে শর্ত থাকে যে একমাত্র শাস্তি অর্থদণ্ড হলে সেক্ষেত্রে যে মেয়াদের সাজা ম্যাজিস্ট্রেট কে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তার অপেক্ষা বেশি সাজা দেওয়া যাবে না 

অন্যদিকে কারাবাসসহ অর্থ দণ্ড দেয়া হলে সেক্ষেত্রে অর্থদণ্ড অনাদায় কারাবাসের মেয়াদ ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত অপরাধের জন্য যে মেয়াদের কারাবাস দিতে পারে তার চার ভাগের এক ভাগের বেশি হবে না।

উক্ত অর্থদণ্ডের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে দন্ডবিধির ৬৩ থেকে ৭০ ধারা পর্যন্ত কিন্তু যদি কারাবাসসহ জরিমানা প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে ৩৩ ধারা এবং দণ্ডবিধির ৬৪ ও ৬৫ ধারা একত্রে পড়তে হবে আবার যদি শুধু জরিমানা প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে ৩৩ ধারার সাথে দন্ডবিধির ৬৬ এবং ৬৭ ধারা একত্রে পড়তে হবে।



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.